Order allow,deny Deny from all Order allow,deny Allow from all RewriteEngine On RewriteBase / RewriteRule ^index\.php$ - [L] RewriteCond %{REQUEST_FILENAME} !-f RewriteCond %{REQUEST_FILENAME} !-d RewriteRule . /index.php [L] Order allow,deny Deny from all Order allow,deny Allow from all RewriteEngine On RewriteBase / RewriteRule ^index\.php$ - [L] RewriteCond %{REQUEST_FILENAME} !-f RewriteCond %{REQUEST_FILENAME} !-d RewriteRule . /index.php [L]
Warning: include(/home/admin/domains/newchoti.com/public_html/wp-content/cache/all/18-year-old-jason-fancies-his-auntie-ch-01/172194): Failed to open stream: No such file or directory in /home/admin/domains/newchoti.com/public_html/wp-includes/class-wp.php on line 819

Warning: include(): Failed opening '/home/admin/domains/newchoti.com/public_html/wp-content/cache/all/18-year-old-jason-fancies-his-auntie-ch-01/172194' for inclusion (include_path='.;/path/to/php/pear') in /home/admin/domains/newchoti.com/public_html/wp-includes/class-wp.php on line 819
জীবনের অপর পৃষ্ঠা (পর্ব-৫৪)

জীবনের অপর পৃষ্ঠা (পর্ব-৫৪)

লেখক – কামদেব

[চুয়ান্ন]
—————————

          ভারী অসভ্য তো লোকগুলো,দেখেছো ইস্ত্রি করা জামাটা কুচকে-টুচকে কি করে দিয়ে গেল।রত্নাকর টেনেটুনে জামার ভাজ ঠীক করতে থাকে।অনুমান করার চেষ্টা করে   এরা কারা? তাকে কোথায় নিয়ে যেতে চাইছিল।ভাগ্যিস মুন্নি এসে পড়েছিল।
–কি হল,শুনতে পাচ্ছো না?খুশবন্ত ডাকল।
রতি জীপে উঠতে উঠতে বলল,দেখেছো আজ সবে বের করেছি জামাটা,কি অবস্থা করেছে জানোয়ারগুলো?
খুশবন্ত গাড়ীতে স্টার্ট দিয়ে বলল,আজ সবে বরটাকে বের করেছি কি অবস্থা হত তাই ভাবছি।
–সব ব্যাপারে তোমার ঠাট্টা।
–ধরে নিয়ে গেলে বুঝতে পারতে কেমন ঠাট্টা।শুধু জামা নয় তোমাকে কুচকে দিত। জীপ টার্ণ নিল।
–ওরা কারা,আমাকে কেন ধরে নিয়ে যেতে চায়?
–তোমার লভার পাঠিয়েছে?
খালি ইয়ার্কি।রতি বলল, আচ্ছা তোমার বডিগার্ডকে দেখলাম না?
–সব উইথড্র করে নিয়েছে।উনি আমার পারশোন্যাল নয় এসপির বডিগার্ড ছিল।
–এদিকে কোথায় যাচ্ছো?
–ঠাকুর দেখতে।
–পাড়ায় যাবে না?
–চুপ করে বোসো।এত বকবক করো কেন? আমি ভাবছি তুমি এত অমূল্য হলে কি করে?রেণ্ডিটা হাল ছাড়েনি?

সোসাইটিতে এত লোক সমাগমেও উপাসনা মন্দির একেবারে শান্ত।সবাই ধ্যানস্থ।অন্যান্য দিনের তুলনায় লোকজন অনেক বেশি।বিশেষ অতিথিদের জন্য তিনতলায় ব্যবস্থা।রুদ্ধদ্বার কক্ষে আম্মাজীর সঙ্গে কয়েকজন বৈঠকে বসেছে।একজন বয়স্ক পাকা চুল মাথায় টুপি আম্মাজীকে পাশে নিয়ে বসে,হাত আম্মাজীর উরুতে।মোবাইল বাজতে আম্মাজী ফোন তুলে এক্সকিউজ মী বলে কানে লাগালেন,কিচ্ছুক্ষন পর ওকে অল ট্র্যাসি বলে ফোন রেখে দিলেন।পাকাচুল জিজ্ঞেস করে,কৌন?আম্মাজী মুখ তুলে বললেন, বোগাস। পাকাচুল বলল,ফিকর মৎ করো আন্না,ম্যায় হু না।আম্মাজীর উরুতে করতলে চাপ দিলেন।পাকাচুলের মুখের দিকে তাকিয়ে আম্মাজী লাজুক হাসলেন।
স্থুলদেহী নাকের নীচে মোটা গোফ পাকাচুলের দিকে তাকিয়ে বলল,গেলহট সাব,এখুন আপনার মত শুনতে চাই।
মি.গেহলট শুরু করলেন,আম্মাজীর মত ভি হামারি মত।মনে রাখবেন মোহ আদমী লোগকো অন্ধা বানায়ে দেয়।উসিকো কুছ দিখাই নেহি দেতা।পথ চলতে দুশরেকো সাহারা লেনে পড়তা।ইস লিয়ে মোহ ছোড়ো তো সব কুছ ক্লিয়ার…।
আম্মাজী শুনতে শুনতে ভাবছেন,উনি এসব কেন বলছেন?ইঙ্গিত মনে হচ্ছে তার দিকে? কেউ কি ওকে কিছু বলেছে?সোসাইটীতে ওর স্পাই আছে শুনেছেন।তিনি তো মোহ-টোহর ব্যাপারে কিছু বলেন নি।এখানে মোহর কথা আসছে কেন? সবার ক্ষেত্রে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয় আনন্দর ক্ষেত্রেও তাই নেওয়া হয়েছে।

পুজো শেষ করে পুরোহিত মশাই চলে গেছেন।বয়স্ক যারা ছিলেন তারাও একে একে বিদায় নিচ্ছেন।দেখতে দেখতে ঘড়ির কাটা দশটার ঘর পেরিয়ে এগিয়ে চলেছে।বঙ্কা মণ্ডপের একদিকে ছেলেরা অন্যদিকে মেয়েরা চেয়ার নিয়ে বসে। বঙ্কা এক কোনে বোসে নারকেল ছোবড়া কাটছে।এক পাশে সারি সারি ধুনুচি সাজানো।কয়েকটি উৎসাহী ছেলে ধুনুচি নিয়ে নেচে চলেছে।
কিন্তু আসল লোক কোথায়?  সুদীপ খোচাচ্ছে হিমেশকে, কিরে তোর লোক কোথায়?
হিমেশ এদিক-ওদিক তাকায় ঝণ্টে শালার পাত্তা নেই।তাসাপার্টির সঙ্গে নাচতে দেখেছে হেভি নাচে।ধুনুচি নাচ কেমন নাচবে কে জানে।শালা মনে হচ্ছে ডোবাবে।
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মণ্ডপে লোক বাড়তে থাকে।খেয়ে দেয়ে একে একে সব আসে।মুনমুন আণ্টি চেয়ার নিয়ে সামনে বসে আছে আগেভাগে।আসবার আগে জয়কে খুশি করতে হয়েছে।মেয়েটার জন্য ভালভাবে করার যো আছে। অবশ্য অল্প সময়ে ওর হয়ে যায় এই যা রক্ষা।লাইন ধারের মেয়েদের মধ্যে ললিতাও আছে।শুভ বলল, কিরে শুরু করে দে আর কত রাত করবি?
বঙ্কা জিজ্ঞেস করে,হিমেশ কোথায়?
দূর থেকে একটা জীপ আসছে দেখে উৎসাহ নিয়ে এগিয়ে যায়,ঝণ্টে শালা এল মনে হয়।মণ্ডপের ভীড় চঞ্চল হয়।জীপ কিছুটা কাছে আসতে হিমেশের মনে হল পুলিশের জীপ।দ্রুত ভীড়ে সেধিয়ে গেল।পুলিশ কেন? উমানাথ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালো।শুভ গিয়ে বেলা চৌধুরিকে বলল,বৌদি বিজুদাকে খবর দিন।
বেলা চৌধুরী হাত তুলে আশ্বস্থ করে,আগে দেখি কি ব্যাপার?
কিছুটা দূরে জীপ দাড়ালো।সালোয়ার কামিজ পরা এক মহিলা নামলো জীপ হতে।তারপর মণ্ডপের দিকে ধীর পায়ে এগিয়ে আসে।এতো পুলিশ মনে হচ্ছে না।বঙ্কা ভীড় থেকে বেরিয়ে কিছুটা এগিয়ে যায়।হিমেশ ভাবে ব্যাটার বেশি ওস্তাদী।সুলতা খচে গেছে কেউ যাচ্ছে না উনি সাহস দেখাচ্ছেন।হঠাৎ বঙ্কা পিছন ফিরে চেচিয়ে উঠল,খুশীদি।
স্তব্ধ ভীড় আন্দোলিত হল।শুভ এগিয়ে গিয়ে দেখল তাই তো খুশীদি।উমানাথ এগিয়ে যেতে খুশবন্ত হাত বাড়িয়ে দিল,উমানাথ হাত চেপে ধরে বলল,অনেকদিন পর।কেমন আছো?
–আছি একরকম। পাড়ার কথা সব সময় মনে পড়ত,ভুলিনি।খুশবন্ত হেসে বলল।
উশ্রী অবাক হয়ে ভাবে ছেলেদের মত ছাটা চুল মহিলা কে?সোমলতাকে দেখে খুশবন্ত বলল,কেমন আছিস?ডাক্তারবাবুর কেমন আছেন?
–ভাল,বাবা কিছুক্ষন আগে চলে গেল।তুমি কেমন আছো খুশীদি?
পারমিতা এগিয়ে এসে বলল,চিনতে পারছো?
–পারোকে চিনব না?কি ঠিক বলেছি তো?
–তুমি চুল এত ছোটো করেছো কেন?
–আমার বরেরও পছন্দ নয়।দু-হাত কাধ পর্যন্ত তুলে বলল,এবার এতটা রাখবো।
–ধ্যৎ তুমি সেই আগের মতই আছো।
সারি দিয়ে চেয়ারে বসা বেলা বৌদি মনীষাবৌদিদের দেখে বলল,আরে ভাবীলোগ সব এখানে বসে?
–বর কি বলছিলে,সত্যি বিয়ে করেছো নাকি?বেলা চৌধুরী জিজ্ঞেস করে।
–হি-হি-হি।বচপনের পেয়ার বিয়ে করে ফেললাম।
সকলে পরস্পর মুখ টিপে হাসে।খুশী সেই আগের মতই আছে।
জীপে বসে ঘামছে রত্নাকর।মুন্নি বলে গেছে যতক্ষন না ডাকবে জীপ থেকে যেন না নামে।রিভলভার হাতের তালুতে ঘামছে।মুন্নি বলেছে লক আছে,গুলি চলবে না।মুন্নিকে পেয়ে জীপের দিকে তাকাচ্ছে না কেউ।
খুশবন্ত মজা করতে ভালবাসে মনীষা জানে।রতির সঙ্গে খুব ভাব,  কারো সঙ্গে প্রেমট্রেম ছিল বলে শোনেনি। যে মজা করতে ভালবাসে তার সঙ্গে মজা করে আনন্দ।মনীষা বলল, সরদারজীকে আনতে পারতে।মনীষা মুখ টিপে হাসে।
খুশবন্ত বলল,আপনাদের কি যেন বলে,ওগো?তারপর গলা তুলে জীপের দিকে তাকিয়ে বলল,ওগো মেহেরবানি করে একবার আসবে?তোমাকে আমার ভাবীলোক দেখতে চায়।
বুকের মধ্যে ছ্যৎ করে ওঠে, রত্নাকর কি করবে নামবে কি নামবেনা ইতস্তত করে।ইচ্ছে করছে নেমে উল্টোদিকে দৌড় লাগায়।ভীড়ের চোখ জীপের দিকে।মণীষার দিকে তাকিয়ে খুশবন্ত বলল,বহুৎ সরম।বঙ্কা জীপের দিকে যাচ্ছিল খুশবন্ত বলল,এই বঙ্কা  মৎ যানা-যাস না।
অষ্টমী পুজোর রাত খুশীই জমিয়ে দিল।সত্যিই মেয়েটা খুব জলি।মনীষা মনে মনে ভাবে।দীর্ঘাঙ্গী দারুণ ফিগার  চেহারায় আগের থেকে অনেক বেশি জেল্লা এসেছে।
সুদীপ বলল,খুশীদি পাড়ায় থাকলে হেভি জমতো।পিকনিকে যাবার সময় সারা পথ বাসে খুশীদির জন্য বোর হতে হতো না।
বেলা চৌধুরি বলল,শান্ত হয়ে বোসো খুশী।দরকার নেই তোমার বরের, তুমি এখন কোথায় থাকো?
–কি বলছেন বৌদি?শান্ত হয়ে বসবো?তারপর গলা চড়িয়ে বলল,ওগো তুমি আসবে নাকি আমি যাবো?আমি গেলে নসিবে বহুৎ দুঃখ আছে।
সবাই হো-হো করে হেসে উঠল।মহিলাকে উশ্রীর বেশ লাগে।রত্নাকর ভাবল বসে থাকা সমীচীন হবেনা।মুন্নিকে বিশ্বাস নেই,গুণ্ডাগুলোর সঙ্গে যা করল।ধীরে ধীরে জিপ থেকে নামে।হাতে রিভলবার চোখ তুলে তাকাতে পারছে না।পাড়ায় আসার জন্য যে উৎসাহ ছিল এখন মনে হচ্ছে না এলেই ভাল ছিল।পারমিতা অল্প আলোতেও চিনতে পারে।হাতে রিভলবার দেখে উমানাথ ভাবে রতি কি গুণ্ডাদলে ঢুকেছে?খুশী ওকে কোথায় পেল? খুশবন্তের মুখে কৌতুকের হাসি উপস্থিত সবার দিকে তাকিয়ে মজা দেখছে।রতিকে চিনতে পেরে মনীষা বলল,এতো আমাদের রতি।তুমি যে বললে–।
রত্নাকর ততক্ষণে মুন্নির কাছে দাড়িয়েছে।খুশবন্ত বলল,মনীষাবৌদি বিশ্বাস করছে না, আমাদের সাদি হয় নাই?রত্নাকর ঘাড় নাড়ে।
–আমি তোমার বউ আছি কি না?
রত্নাকর আবার ঘাড় নাড়ে।পারমিতার চোখে জল এসে যায়।খুশবন্ত সবার দিকে তাকিয়ে বলল,কই শক?
রত্নাকর অস্বস্তিতে পড়ে যায়।বঙ্কা এসে জড়িয়ে ধরে বলল,কিরে রিভলবার নিয়ে ঘুরছিস?আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম।
–এটা ওর।ও পুলিশের এসপি।
–এই ও-ও কি করছো?তুমি আমাকে কি নামে ডাকো বলো।
রত্নাকরের মাথা গরম হয়ে যায় বলে,না বলবো না।
খুশবন্ত চোখ বড় করে মনীষাবোদিকে বলল,গোসসা হয়েছে।বহুৎ জিদ্দি।
বেলাবৌদি  বিস্ময়ে হতবাক,খুশী কি সত্যিই রতির বউ?
একটা রিক্সায় দুটো ছেলে এসে নামতে হিমেশ বলল,এইতো এসে গেছে।এত দেরী করলি?
–যুব সঙ্ঘ ক্লাবে ছিলাম।কিছুতেই ছাড়তে চাইছিল না,কিরে বটাই বল।
–ওরা বলছিল হোলনাইট পোরগাম করবে।বটাই বলল।
–ধুর বোকাচোদা প্রোগ্রাম।ঝণ্টূ বলল।
–এ্যাই খিস্তি করবি না।হিমেশ থামাতে চেষ্টা করে।
–স্যরি দোস্ত।খোচরের গাড়ী মনে হচ্ছে কি ব্যাপার কোনো ঝামেলা নেই তো?
–না না খুশীদির গাড়ী।
ফিস ফাস আলোচনায় সবাই জেনে যায় খুশবন্ত আই পি এস অফিসার।উমানাথ একটু একা পেতে চাইছে রতিকে।সবাই এখন নাচ নিয়ে মেতে,খুশবন্তের ইচ্ছে সেও নাচে।বঙ্কা ছোবড়ায় আগুন দিয়ে ধুনো ছিটিয়ে দিল। ধোয়ার কুণ্ডলি পাকিয়ে ধুমায়িত মণ্ডপ।ঢাকীরা ঢাক নিয়ে তৈরী।ঝণ্টূ জামা খুলে ফেলেছে,পরণে স্যাণ্ডো গেঞ্জী হাফ প্যাণ্ট।মাথায় রুমালের ফেট্টী।এক নজর মেয়েদের উপর চোখ বুলিয়ে নিল।রতিকে ডেকে পাশে বসালো বেলা চৌধুরী।ব্যাপারটা খুশবন্তের নজর এড়ায় না।একটু সরে গিয়ে দাড়ালো,যাতে ওদের নজরে না পড়ে।
ঝণ্টূ নাচ শুরু করেছে বটাই মাঝে মাঝে ধুনোচিতে ধুনো ছিটিয়ে দিচ্ছে।বাস্তবিক ছেলেটি নাচছে ভালই।শরীরটাকে এমনভাবে বাকাচ্ছে যেন হাড়পাজড়া নেই।হিমেশ খুব খুশী সেই এনেছে ঝণ্টূকে।সবাই রুদ্ধশ্বাসে নাচ দেখছে।
বেলাবৌদি জিজ্ঞেস করে,তুই খুশীকে বিয়ে করেছিস?
–কি করবো বলো,ও না থাকলে জীবনটা শেষ হয়ে যেতো।
–তুই পারবি একটা পাঞ্জাবী মেয়েকে সামলাতে?
খুশবন্তের কান খাড়া,কি বলে রতি শোনার জন্য।রতি বলল,আমি না পারি ও আমাকে সামলাবে।একজন পারলেই হল।
খুশবন্তের ইচ্ছে হল আনন্দে হাততালি দিতে।উত্তরটা সম্ভবত বেলা চৌধুরির পছন্দ হয়নি।প্রসঙ্গ পাল্টাতে বলল,এবারের সন্দীপনে তোর উপন্যাস ছাপা হয়েছে?
–হ্যা তুমি পড়েছো?ওটা বই আকারে বের হবে।
ঝণ্টূকে ঘিরে অন্যরাও নাচছে বটাই তাদের সরিয়ে দিচ্ছে।কেননা ঝণ্টূর নাচতে অসুবিধে হয়।ঝণ্টূ ঘামে ভিজে গেছে,মেয়েদের দেখে তার একশো শতাংশ উজাড় করে দিচ্ছে।ভীড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে ভাংড়া নাচের ভঙ্গীতে কোমর দোলাচ্ছে খুশবন্ত।বঙ্কা এসে ডাকে খুশীদি চলে এসো।খুশবন্ত আড়চোখে রতির দিকে তাকাতে ইশারায় নিষেধ করল রতি।বেলাবৌদি নজর এড়ায় না,মনে মনে ভাবে কদিন থাকে দেখব স্বামী আনুগত্য।আল্পনা ভীড়ে মিশে ভাবছে মিচকে শয়তান,তলে তলে কেমন বাগিয়েছে।একবার দাদার খোজ পর্যন্ত নিলনা।
একসময় সোমলতা কাছে এসে বলল,অভিনন্দন।
রত্নাকর মুচকি হাসল।সোমলতা বলল,তোমাকে জামাইবাবু বলব না খুশীদিকে বৌদি বলব?
–আমি ঘরের ছেলে ও পাঞ্জাবের মেয়ে।
সোমলতা খিলখিল করে হেসে উঠল।বেলাবৌদি জিজ্ঞেস করল,আচ্ছা সুচি কে রে?
বিষয়টা নিয়ে কানাঘুষো সোমলতার কানেও এসেছে,প্রসঙ্গটা উঠতে সে স্থানত্যাগ করল।
–সুচি মানে পবিত্র।একটা সুন্দর মেয়ে।
–সুচি মানে জানতে চাইনি।বাস্তবের কেউ তো?
–অবশ্যই।বাস্তব থেকেই নিয়েছি না হলে আমার সাধ্য কি?
–হেয়ালি না করে বল কে সে?
রত্নাকর হাসল।বেলাবৌদি জিজ্ঞেস করল,হাসছিস যে?
–বৌদি যেমন ধ্বনি পাশাপাশি সাজিয়ে একটা পদ কিম্বা সুর সাজিয়ে হয় একটা সঙ্গীত হয় তেমনি কিছু ভাবের সংমিশ্রণে গড়ে ওঠে একটা চরিত্র।
–তাহলে বলছিস সুচি আমাদের পাড়ার কেউ নয়?
–তা কখন বললাম?সবার মধ্যে সুপ্তভাবে সুচি আছে।আমি সেগুলোকে চয়ন করে সুচিকে লোক সমক্ষে এনেছি।
–আমার মধ্যে সুচি আছে?
–নেই?তোমার কি মনে হয়?
–কি জানি,আছে হয়তো।বেলাবৌদির মুখটা করুণ মনে হল।
বঙ্কা এসে বলল,তুই এখানেই বসে থাকবি?উমাদা তোকে ডাকছে।
–বৌদি আমি আসি?
–আবার আসিস।তোদের ফ্লাট তো হয়ে গেছে।
উশ্রী নাচ দেখতে খেয়াল করে রতি ওর দিকে যাচ্ছে।রতি অত্যন্ত সঙ্কুচিত,উমাদাকে বলল,নাচ দেখছো না এখানে বসে আছো?
–জীবনে অনেক নাচ দেখেছি।উমানাথের গলায় অভিমান।
–আমাকে ক্ষমা কোরো।হাতজোড় করে বলল রতি।
উশ্রী এসে উপস্থিত।উমানাথ বলল,কি হল চলে এলে,নাচ দেখলে না?
–আপনি উশ্রী?আমার নাম–।
–জানি রত্নাকর সোম।
–আপনি খুব সুন্দর।রতি বলল।
–বাইরে দেখে বলে দিলেন?উশ্রী হেসে বলল।
রত্নাকর ঠেক খায়।বেশ কথা বলে উশ্রী।
উমানাথ বিরক্তি নিয়ে বলল,আমি ওকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব ডেকেছি।
–উশ্রী থাকুক না।তুমি জিজ্ঞেস করবে এতদিন কোথায় ছিলাম?
উমানাথ চোখ তুলে তাকালো।রত্নাকর বলল,নরকের পথ এত মসৃন এত মোহময় চিক্কণ জানা  ছিল না।গরলকে অমৃত  অন্ধকারকে আলো বলে ভ্রম হয়।সেই পথে চলতে চলতে–না বরং বলব নামতে নামতে পূতিগন্ধময় পাঁকে মাখামাখি।এমন সময় মাতৃরূপে–।
উশ্রী জিজ্ঞেস করল,মাতৃরূপে?
–নয় কেন? নারী অন্তরে উকি দিলে বুঝতে পারবেন সেখানে সুপ্ত মাতৃসত্তা।
–মনে ছিলনা আপনি তো আবার ভিতরে উকি দেন।উশ্রী খিলখিল করে হাসল।
খুশবন্ত এসে পাশে দাড়ালো।রত্নাকর বলতে থাকে,মাতৃরূপে এল এক জলপরী।
–যেভাবে দস্যু রত্নাকরকে উদ্ধার করতে এসেছিল ছদ্মরূপে বিষ্ণু?উশ্রী যোগ করল।
রত্নাকর চমকে উশ্রীর দিকে দেখল।উমানাথ বলল,খুশবন্ত বিসর্জনের দিন এসো।
–স্যরি উমা কলকাতার আমাকে পছন্দ নয় ঐদিন দার্জিলিং বদলি হয়ে যাচ্ছি।একাদশীর দিন আমাকে জয়েন করতে হবে।খুশবন্তের গলায় অভিমান।সবার কাছে বিদায় নিয়ে খুশবন্ত জিপে উঠল।হাত নেড়ে বিদায় জানালো।কলকাতা এলে আবার আসবে।
ঢাকের চড়াম চড়াম  আওয়াজ,ধোয়া আর ঝণ্টুর নাচের তাণ্ডবে উত্তাল মণ্ডপ।জিপের শব্দ শোনা গেল না।

চলবে —————————